Breaking

Wednesday, August 14, 2019

বাশঁখালী সমুদ্র সৈকত, চট্টগ্রাম ট্যুর প্লান যাতায়াত ও আনুসাংগিক খরচাদি

বাশঁখালী সমুদ্র সৈকত, চট্টগ্রাম ট্যুর প্লান যাতায়াত ও আনুসাংগিক খরচাদি 

চট্টগ্রাম শহর থেকে মাত্র ৪০ কিমি দক্ষিণে বাঁশখালীর উপকূল জুড়ে দীর্ঘ ৩৭ কিলোমিটার বিস্তৃত অভাবনীয় সৌন্দর্যের ভরপুর বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তর বাশঁখালী সমুদ্র সৈকত। তীড়ে ভিড়তে চোখে পড়বে সাগরদিঘীর ন্যায় বিশাল বিশাল মাছের ঘের, বিশাল সমুদ্রের দিগন্তজোড়া বিস্তীর্ণ জলরাশি, বালুকাময় মরুপথ, ঝাউবনের ছায়াঘন মনকাড়া নিবিড় পরিবেশ, মাঝে সৈকতজুড়ে সবুজ গালিচার বিস্তৃত প্রান্তর, সাগরের উত্তাল গর্জন, সুসজ্জিত বেড়িবাঁধ, সাঙ্গু নদীর মোহনা, সাগর জলে ভেসে ভেড়ানো মাছ ধরার ট্রলার/নৌকা, জেলেদের জালে ধরা পড়া টাটকা সমুদ্রিক মাছ ও রূপালী ইলিশ।

দেখে মিলে সোয়াম্প ফরেস্ট ও ম্যানগ্রোভ বনের ন্যায় কেওড়া ও শ্বাসমূলের, আর সূর্যাস্তের মনোমুগ্ধকর দৃশ্য যেন অপার্থিব মনে হয়। প্রকৃতি যেন নিজ হাতে সাজিয়ে তুলেছেন। এমন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য প্রকৃতিতে বিরল। বেলাভুমিতে পদার্পন করতে লাল গালিচা সংবর্ধনা জানাতে ভুলবে না লাল কাঁকড়ার " বাঁশখালী সমুদ্র সৈকত"

ঝাউবাগানের শাঁ শাঁ দক্ষিণা হাওয়ায় সূর্যাস্ত দেখতে দেখতে সারা বিকেল কাটিয়ে দিতে পারেন।বালুকাবেলায় একেঁ দিতে পারেন একটি বিকেল কাটানোর শিল্পিত চিহ্ন।




প্রেমাশিয়া_কদমরসূল_খানখানাবাদ_বাহারছড়া_রত্নপুর_কাথারিয়া_সরল_গন্ডামারা সহ সাত-আটটি পয়েন্ট সেজে আছে আপন আপন রূপ মাধুর্যে।

বাঁশখালী চা-বাগান, চট্টগ্রাম।
শত বছরের ঐতিহ্যের পরিক্রমায় প্রায় সাড়ে তিন হাজার একর জায়গা জুড়ে স্তরে স্তরে সাজানো বাশঁখালী চা-বাগান। উঁচু-নিচু পাহাড়ী টিলা এবং পাহাড়ঘেরা সমতলে সবুজের চাষাবাদ। বৈচিত্র্যময় পাহাড়ী টিলা গুলো দূর থেকে দেখলে অনেকটা 'সবুজ টুপি' মত। আর নীল আকাশের নিচে যেন সবুজ গালিচা। পাহাড়ের কূল বেয়ে আকাবাঁকা মেঠোপথ। উত্তরে আঁকাবাঁকা পথে কলকল রবে বয়ে গেছে সাঙ্গু নদী।

এই চা-বাগান বাংলাদেশের অন্যসব চা-বাগান থেকে ভিন্ন তাৎপর্য বহন করে আর তা হল বন্যহাতি। বাংলাদেশে শুধু এই চা বাগানের আশে পাশেই হাতির দেখা মিলে। শুধু হাতি নয় ভাগ্য সুপ্রসন্ন হলে হাতির পালের সাথেও দেখা হয়ে যেতে পারে ।প্রায় প্রতিদিন বিকালে-সন্ধ্যায়-রাতে বন্যহাতির দল হানা দেয় এই বাগান ও আশে পাশের এলাকাতে। কিন্তু কিছু বিশেষ স্থানে প্রায়ই হাতির আনাগোনা থাকে। আর হুট করে ভাগ্যগুনে যদি হাতির পালের দেখা হয়ে যাই সেক্ষেত্রে দুর্ঘটনা এড়াতে সাবধানতা অবলম্বন করা আবশ্যক ।

৩ লক্ষ ২৫ হাজার কেজি পাতা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে এগিয়ে চলা এই চা-বাগানে চা-পাতা প্রক্রিয়াজাত করণ করার দৃশ্যটিও অনুমতি নেয়া সাপেক্ষে দেখতে পারেন ভ্রমনকারীরা। ক্লোন চায়ের জন্যে এই বাগানে উৎপাদিত চায়ের খ্যাতি রয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে অসম্ভব সুন্দর এই ক্লোন চা বাগানটি পর্যটকদের কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে

চা বাগানটি প্রতিষ্টার ইতিবৃক্তঃ
ব্রিটিশ শাসনামলে ১৯১২ সালে তৎকালীন এই অঞ্চলের জমিদার রায় বাহাদুর চা বাগানটি গোড়াপত্তন করেন। স্বাধীনতা পরবর্তী রাষ্টপতি ৯৮/৭২নং ধারা মোতাবেক খাসভুক্ত করে এই চা-বাগানকে উজ্জীবিত করার জন্য জেলা প্রশাসক চট্টগ্রাম চা বোর্ডকে দায়িত্ব দেওয়া দেয়।সে অনুসারে ১৯৮৫ সালে চট্টগ্রাম চা বোর্ড প্রথম আবাদ শুরু করে। বর্তমানে সিটি গ্রুপের নিবিড় তক্তাবধানে এই চা বাগানটি পরিচালিত হচ্ছে ।

ঢাকা থেকে কিভাবে যাবেনঃ
ঢাকা থেকে যেকোন পথে চট্টগ্রাম হয়ে বাঁশখালী যাওয়া যায়।বহদ্দারহাট বাস টার্মিনাল ও শাহ আমানত সেতু (স্থানীয় ভাষার নতুন ব্রীজ) থেকে বাঁশখালী স্পেশাল সার্ভিস ও সুপার সার্ভিস নামে দুটি বাস ছেড়ে যাই প্রতি ২০ মিনিট পর পর। মাত্র ৬০-৮০ টাকা ভাড়ায় বাঁশখালী ঘন্টা দেড়েকের দুরত্ব। তাছাড়া নতুন ব্রীজ থেকে সিএনজি যোগে সরাসরি সাঙ্গু নদী পার হয়ে বাশঁখালীর চানঁপুরে। সিএনজি ভাড়া জনপ্রতি ৪০-৫০ টাকা। চানঁপুর থেকে চা-বাগান, ভাড়া জনপ্রতি ২৫-৩০ টাকা। চা-বাগান থেকে পুনরায় চাঁনপুর এসে গুনাগরি/কালিপুর ছলিয়ার বাপের পুল/বৈলছড়ি হয়ে সী-বীচে। বৈলছড়ি হয়ে কাথরিয়া পয়েন্ট,ছলিয়ার বাপের পুল বাহারছড়া পয়েন্ট আর গুনাগরি হয়ে খানখানাবাদ ও কদমরসূল পয়েন্ট।

মাইক্রোবাস ভাড়া নিয়ে নিতে পারেন সারাদিনের চুক্তিতে। অবকাঠামো সেভাবে গড়ে উঠেনি। দুই-একটা রিসোর্ট নিমার্ণাধীন। তবে সব স্পট গুলো প্রায় কাছাকাছি, এক দিনেই ঘুরে ব্যাক করা যাবে।

বিঃ দ্রঃ- সঙ্গে যা নিয়ে যাবেন তা ফিরিয়ে আনতে ভুলবেন না। যত্রতত্র পলিথিন, খাবার প্যাকেট ও সিগারেটের ফিল্টার ফেলবেন না। আমরা যেমন দেখছি, আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের কাছেও যেন তেমনই উপস্থাপন করতে পারি। আসুন চারপাশ পরিচ্ছন্ন রাখি, নির্মল দৃশ্যগুলো মুগ্ধতা ছড়িয়ে পড়ুক।

No comments:

Post a Comment